শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাট সদর ইউপির শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ইউএনওর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-বরেন্দ্র নিউজ সাপাহারে ফসলী জমি কেটে নির্ধারিত স্থানে পানির লাইন না বসিয়ে অর্থের বিনিময়ে অন্য স্থানে বসানোর অভিযোগ-বরেন্দ্র নিউজ বাংলাদেশকে জুলুম অত্যাচার হাত থেকে রক্ষা করতে ইসলামী রাষ্ট্রের বিকল্প নেই-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান খুলনার দাকোপ ছাত্র লীগের জন্মদিন পালনে আটক-৩-বরেন্দ্র নিউজ সাপাহারে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পেইনে অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ গণ অধিকার পরিষদের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন-বরেদ্র নিউজ সীমান্তবর্তী উপজেলা ডিমলায় শতাধিক এতিম শিশুকে ইউএনওর কম্বল উপহার-বরেন্দ্র নিউজ সাপাহারে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত-বরেন্দ্র নিউজ
ঘুরে আসুন গৌড় নগরীতে-বরেন্দ্র নিউজ

ঘুরে আসুন গৌড় নগরীতে-বরেন্দ্র নিউজ

মহি মিজান,শিবগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
কাজের চাপে নাকাল হয়ে অনেকেই ছুটে যেতে চান শহর থেকে দূরে কোথাও।
সুখবর হলো, সামনেই স্বাধীনতা দিবসের ছুটি । এই ছুটিতে চলে যেতে পারেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

তাই স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বেড়াতে যাবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রথমেই ঘুরবেন কোথায়, এ ভাবনা মাথায় আসতেই সর্বপ্রথমেই হয়তো আপনার মনে হবে ছোট সোনামসজিদ, তোহাখানা, দারসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা, ষাঁড় বুরুজ, মহানন্দা নদীর ওপর অবস্থিত ‘শেখ হাসিনা সেতু’ দেখতে গেলে মন্দ হয় না।
তাই নয়নাভিরাম প্রকৃতির সঙ্গে ইতিহাসের অনন্য কীর্তি যাঁদের আকর্ষণ করে, তাঁদের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ঘুরে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। নিরিবিলি প্রকৃতির সান্নিধ্যে সীমান্তবর্তী এই জেলা বাংলার প্রাচীন জনপদ গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেন বংশের রাজাদের খনন করা দীঘি আর সুলতানি আমলের মুসলিম শাসকদের স্থাপিত মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা এই জেলাকে দিয়েছে ঐতিহাসিক সমৃদ্ধি। সে সঙ্গে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত বেশ কয়েকটি স্থাপনা ইতিহাসের পুনর্পাঠ হিসেবে দেখা যাবে। দূর অতীতের পুণ্ড্রবর্ধন, গৌড় ও জান্নাতাবাদের মতো আলোকিত স্থান ও ঐতিহ্যে লালিত ধনজনে পূর্ণ এক সমৃদ্ধশালী অঞ্চল এ চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ঢাকা থেকে ৩১৭ কিলোমিটার আর বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে দূরত্ব মাত্র ৮২ কিলোমিটার।

এ ছাড়া আম, রেশম, কাঁসা, পিতল, লাক্ষা, নকশিকাঁথা ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এছাড়া আরো পাবেন ‘চাঁপাই ম্যাংগো’ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত চাঁপাইনবাবগঞ্জের জগৎ বিখ্যাত আমের ৩৩ পদের আচার। ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা গান, আলকাপ, টপ্পা গান ও লোককাহিনীর এ জেলার স্বকীয় সাংস্কৃতিক পরিচয়।


ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ
জেলাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় নানা পুরাকীর্তির নিদর্শনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি গৌড়ের ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ। মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। মসজিদের চারকোণে চারটি অষ্টকোনাকৃতির মিনার বা টারেট। ওপরে ১২টি অর্ধগোলাকৃতির ও তিনটি চৌচালা আকৃতির মোট ১৫টি গম্বুজ আছে। গম্বুজগুলোতে একসময় সোনার পিণ্ড ছিল বলে মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে সোনামসজিদ, এমন একটি জনশ্রুতি রয়েছে। স্থাপত্যকলা ও শৈল্পিক সৌন্দর্যের বিচারে এ মসজিদ গৌড়ের রত্ন বলে উল্লেখ করেন ঐতিহাসিকরা। মসজিদটি সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে ওয়ালী মুহাম্মাদ কর্তৃক ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত হয়। মসজিদের পাশেই শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি।
তোহাখানা,ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদের অদূরেই অবস্থিত তোহাখানা। ১৬৫৫ সালে শাহ সুজা এটি নির্মাণ করেন। কথিত আছে, তাপনিয়ন্ত্রিত ইমারত হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়। আর এর পাশেই রয়েছে মোগল আমলের একটি মসজিদ ও হজরত শাহনেয়ামতুল্লাহর মাজার।
দারসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা
স্থলবন্দর ও ছোট সোনামসজিদের মধ্যবর্তী শিবগঞ্জ উপজেলার ওমরপুর নামক জায়গার পাশে দারসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা। একটি আরবি শিলালিপি অনুসারে ৮৮৪ হিজরি অনুযায়ী ১৪৭৯ সালে সুলতান শামসউদ্দিন ইউসুফ শাহের রাজত্বকালে তারই নির্দেশে মসজিদটি নির্মিত হয়।
যদিও পরিত্যক্ত অবস্থায় অযত্ন-অবহেলায় রয়েছে স্থাপনাটি, তবু বিশাল মসজিদ, তার ভেতর আর বাইরের অনন্য নকশা কারুকার্য মোহিত করবে নিঃসন্দেহে।
মসজিদের পূর্বে ছোট দীঘির পাশেই বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে দারসবাড়ি মাদ্রাসা। আরবি ‘দারস’ শব্দের অর্থ পাঠ বা অধ্যয়ন।

এ ছাড়া জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে আরো রয়েছে দাদনচক মসজিদ, খঞ্জন দীঘি বা রাজাবিবির মসজিদ, ধনিয়াচক মসজিদ, বালিয়াদীঘি, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মাঝপাড়া বালিগ্রাম ৬ গম্বুজ মসজিদ, নবাবি আমলে নির্মিত মহারাজপুর জামে মসজিদ, ঐতিহাসিক নীলকুঠি, রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর।
সন্ধ্যায় আড্ডা দিতে পারেন মহানন্দা নদীর ওপর অবস্থিত ‘শেখ হাসিনা সেতু’তে। কিছু সুন্দর সময় কাটবে।
আমের রাজধানী হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তাই আমের মৌসুমে জেলা বিস্তৃত আমের বাগানগুলো দর্শনার্থীদের আকর্ষণে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করে। ছায়া-সুনিবিড় আমের বাগানে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি নির্ভেজাল পুষ্টিসমৃদ্ধ এই আমের স্বাদ নিতে কে না চায়। ঘুরে দেখার তালিকায় অবশ্যই কানসাটের আমের হাট রাখা দরকার।

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম সড়কপথে। সময় লাগে সাত থেকে আট ঘণ্টা। জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটারের মধ্যেই অধিকাংশ ঐতিহাসিক স্থাপনা। প্রতিটি স্থাপনার দূরত্ব খুব সামান্যই। ঢাকা থেকে সরাসরি শিবগঞ্জ বাস যায়। হানিফ, শ্যামলী, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, দেশ পরিবহনের বাস চলে। ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা।

থাকার ব্যবস্থা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর ও শিবগঞ্জ উপজেলা শহরে থাকার জন্য রয়েছে স্বল্প খরচে বেশ কয়েকটি হোটেলের ব্যবস্থা। নাহিদ, আলহেরা, স্বপ্নপুরীসহ এসব হোটেলের সিঙ্গেল অথবা ডাবল বেডের ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে এক হাজারের মধ্যেই এছাড়া এসি, ননএসি দুটোই মিলবে। এছাড়া আমের সময় ভ্রমনে আসলে বাংলাদেশের বৃহত্তম আম উৎপাদন এলাকা এবং আমের বাজার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট আম বাজারের কলাবাড়ী পয়েন্টে ফ্রিতে থাকতে পারবেন ‘চাঁপাই ম্যাংগো কটেজ’-এ। লেখাটি পড়তে পড়তে হয়তো এই ছুটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন কেউ কেউ। তবে ঘুরে আসুন বাংলাদেশের উত্তরের জেলা শহরটি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT